কম্পিউটার যন্ত্রাংশের পরিচিতি ও ব্যবহার


অপারেটিং সফটওয়্যারঃ
কম্পিউটার চালাতে গেলে শুধু হার্ডওয়্যার দিয়ে কাজ হবেনা বা চলবে না, এর সাথে চাই উপযুক্ত সফটওয়্যার। কম্পিউটারকে প্রাথমিকভাবে চালু করার জন্য বেশ কয়েকটি সফটওয়্যার ব্যবহার করা হয়। তবে তার মধ্যে যে সফটওয়্যারটি সবচেয়ে বহুল ব্যবহৃত সেটার নাম হচ্ছে ডিস্ক অপারেটিং সিষ্টেম বা সংক্ষেপে ‘ডস’।মাত্র কয়েক বছল আগেও এই ডস-এর সাহায্যে কম্পিউটার ওপেন করে ডস ভিত্তিক সফটওয়্যার ব্যবহার করে কম্পিউটারে প্রয়োজনীয় কাজ করতে হতো। কিন্তু আমরা ভাগ্যবান,কারণ আধুনিক বিজ্ঞানের প্রচেষ্টায় আমরা এমন একটি সফটওয়্যার পেয়েছি যেটা ডসের সাহায্যে চালু হলেও পরবর্তীতে এই সফটওয়্যারটি ডসের মতই কাজ করতে পারে। এর অধীনের চমৎকার সব এ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যারগুলো খুব সহজেই ব্যবহার করা যায়। এই সফটওয়্যারটির নাম হচ্ছে ‘উইন্ডোজ’। আমেরিকার সর্ববৃহৎ ও বিখ্যাত সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফট কর্পোরেশন এর আবিষ্কর্তা।
উইন্ডোজ হচ্ছে এক ধরণের অ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রাম বা অপারেটিং সফটওয়্যার। তবে এর সাথে সিষ্টেম সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় ডাটা থাকে বলে একে অন্য কথায় সিষ্টেম সফটওয়্যারও বলা হয়ে থাকে। এর অধীনে রয়েছে অসংখ্য এ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রাম বা সফটওয়্যার। সর্বপরী উইন্ডোজের রয়েছে এক চমৎকার যাদুকরী কার্যক্ষমতা।মাইক্রোসফট কর্পোরেশন নামের প্রতিষ্ঠানটি সর্বপ্রথম ১৯৮৫ সালে উইন্ডোজের একটি প্রাথমিক প্রোগ্রাম তৈরি করে বাজারে ছাড়ে। সে সময় ঐ প্রোগ্রামের ছিল অনেক বাধ্যবাধকতা। সেজন্য ওটা জনপ্রিয় হতে পারেনি। পরবর্তীতে উক্ত সফটওয়্যারটি কিছু পরিমার্জন করে নতুন ভার্সন হিসেবে ১৯৮৭ সালে বাজারে আসে উইন্ডেজ ২.০১ ভার্সন। তারপর ১৯৯০ সালে উইন্ডোজ ৩.০ ভার্সন, ১৯৯২ সালে ৩.১ ভার্সন, ১৯৯৩ সালে ৩.১১ ভার্সন। এভাবে একের পর এক ভার্সন বদলে উইন্ডোজের কর্মক্ষেত্র হয়ে উঠলো বিশাল আর স্বাচ্ছন্দময়। কিন্তু তখনও উইন্ডোজ প্রোগ্রামটি সরাসরি কম্পিউটারে চালানো যেত না। প্রথমে ডস এর মাধ্যমে কম্পিউটার ওপেন করে তারপর উইন্ডোজ চালু করতে হতো।
১৯৯৫ সালে ঘটে যায় শতাব্দীর সেরা ঘটনা। সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফট কর্পোরেশনের নির্মাতা বিল গেটস নামের এক বিজ্ঞানী উইন্ডোজের সম্পূর্ণ নতুন ভার্সন বাজারে ছাড়লেন, নাম দিলেন উইন্ডোজ ৯৫। এই সফটওয়্যারটির বৈশিষ্ঠ্য হলো এটাকে চালতে ডসের প্রত্যক্ষ সহায়তা লাগে না।কম্পিউটার প্রাথমিকভাবে ডস চালু করবে বটে তবে সেটা অনেকটা প্রচ্ছন্নভাবে, মূল কাজটা করবে উইন্ডোজ।সুতরাং ব্যবহারকারী কম্পিউটার ওপেন করলেই সরাসরি উইন্ডেজের ডেস্কটপে উপস্থিত হতে পারবে। আর এর অধীনের এ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যারেও আনা হলো বেশ কিছু পরিবর্তন। ফলে একজন সাধারণ বা নতুন কোন ব্যবহারকারীর পক্ষেও কম্পিউটারে কাজ করার পরিবেশে কোন সমস্যা থাকলো না। উইন্ডোজ ৯৫ ভার্সন নিয়ে মাইক্রোসফট কর্পোরেশন তার সফল যাত্রা শুরু করলেও প্রায় প্রতিবছরই পুরাতন উইন্ডোজের ভার্সনকে আরও কিছু সুবিধা যোগ করে নতুন নতুন ভার্সন বাজারে আসতে থাকে। তবে যে ভার্সনই থাকুক না কেন, অপারেটিং সিষ্টেমে কোন পরিবর্তন হয় না। অর্থাৎ যে ব্যবহারকারী যে ভার্সনই ব্যবহার করুক না কেন, ব্যবহারকারীর কাজের কোন অসুবিধা হবে না। বর্তমানে বাজারে উইন্ডোজের অনেক আপগ্রেড ভার্সন পাওয়া যাচ্ছে এবং তা জনপ্রিয়তাও পেয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য উইন্ডোজ এক্সপি, ভিস্তা, উইন্ডোজ সেভেন, এইট ইত্যাদি। ভাবতেও অবাক লাগে, শুধু এই উইন্ডোজ সফটওয়্যার বিক্রি করেই বিশ্বের সেরা ধনীদের একজন মাইক্রোসফট কর্পোরেশনের মালিক বিল গেটস।

কম্পিউটারে কাজ করার পদ্ধতিঃ
ইতিপূর্বে আমরা কম্পিউটার সংক্রান্ত বিভিন্ন তাত্ত্বিক বিষয়ের সাথে পরিচিত হয়েছি। এবার হাতে কলমে কিভাবে কম্পিউটারকে চালাতে হবে এবং এর থেকে কিভাবে উপযোগি কাজগুলো আদায় করে নিতে হবে সেগুলো পর্যায়ক্রমে আলোচনা করা হবে। আমার বিশ্বাস শুধু সামনে একটি কম্পিউটার এবং এই ব্লগ সাইটটি ওপেন করে প্রবন্ধগুলি সামনে থাকলেই যে কেউ ধাপে ধাপে কম্পিউটার অপারেটিং শিখে নিতে পারবে এবং কম্পিউটার সম্পর্কে সাম্যক ধারণাও অর্জন করতে পারবে।

কম্পিউটার ব্যবহার বা পরিচালনার পূর্বে কিছু সাবধান বাণী যা পালন করা অত্যাবশ্যক।
১. কম্পিউটারের ধারে কাছে ধোয়া বা ঐ ধরণের কিছুর প্রবেশ বন্দ করতে হবে। কারণ এগুলো হার্ডডিস্কে মারাত্মক কূফল বয়ে আনতে পারে।
২. কম্পিউটারকে সরাসরি সূর্যের আলো কিংবা আদ্র আবহাওয়া থেকে দুরে রাখতে হবে।সাধারণত: এসি রুম হলে ভাল হয়।অভাবে ঘরের মধ্যে যেন কখনো ভেজা আবহাওয়া না থাকে এবং ঘরটি মোটামুটি ঠান্ডা থাকে।
৩. দেওয়াল ঘেসে কখনই কম্পিউটারকে রাখা যাবে না। প্রতিটি কম্পিউটারের মধ্যে নিজেকে ঠান্ডা রাখার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা থাকে। দেওয়াল ঘেসে রাখলে সে ব্যবস্থা বাধাগ্রস্থ হয়। এছাড়াও দেওয়াল থেকে চুন, রং ইত্যাদি খসে কম্পিউটারের মধ্যে প্রবেশ করলে কম্পিউটার নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
৪. কম্পিউটার চালু করার আগে অবশ্যই দেখে নিতে হবে এর সাথে লাগানো তারগুলো ঠিকঠাক লাগানো আছে কিনা। কোন তার ঢিলা থাকলে স্পার্ক হয়ে কম্পিউটার ডিভাইস নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
৫. কম্পিউটারে বিদ্যুৎ সংযোগ অবশ্যই ভোল্ট ষ্টাবিলাইজার মাধ্যম হতে হবে।কারণ আমাদেশে বিদ্যুতের উঠা-নামা যে দ্রুত গতিতে হয় তাতে কম্পিউটার হঠাৎকরে খুব বেশী ভোল্টেজ চলে আসতে পারে। এতে কম্পিউটারের নাজুক জিনিষগুলো পুড়ে যেতে পারে।
৬. ডিস্ক ড্রাইভ এর লাইটজ্বলা অবস্থায় কখনোই ডিস্ক বের করা যাবে না।করলে ডিস্ক ড্রাইভ এর রিডার হেড নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
৭. কম্পিউটারের সিগন্যাল বাতি(লাল এন্টিগেটর বাল্ব) মিট মিট করে জ্বলতে থাকলে বুঝতে হবে কম্পিউটার কোন না কোন কাজ করছে। এই অবস্থায় কম্পিউটারের সুইচ সরাসরি বন্ধ করা যাবে না। এতে হার্ডডিস্ক ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে।
৮. কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক কখনই ফরমেট করা উচিৎ নয়।
৯. কম্পিউটারের কাজ করার সময় অস্থির হয়ে কিছু করা যাবে না। এমন অনেক কাজ আছে যা সম্পাদন করতে কম্পিউটার কিছুটা সময় নিতে পরে। অস্থির হয়ে কিছু করলে কম্পিউটারের স্বাভাবিক কাজের ব্যাঘাত সৃষ্টি হবে। ফলে কম্পিউটারের ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।
১০. কম্পিউটার কীবোর্ড একাট প্রয়োজনীয় অংশ। এই কীবোর্ডের বোতামগুলো খুবই স্পর্শকাতর। খুব বেশী জোরে চাপদিয়ে অপারেট করা উচিৎ নয়। কীবোর্ডের কাছাকাছি কোন পাণীয় দ্রব্য বা তরল পদার্থরাখা যাবে না।
১১. কোন একটি প্রোগ্রামে কাজ করার সময় সেই প্রোগ্রাম বন্ধ না করে সরাসরি সুইচ টিপে কম্পিউটার বন্ধ করা যাবে না। কম্পিউটার বন্ধ করতে হলে পর্যায়ক্রমিক ভাবে সব প্রোগ্রামগুলো বন্ধ করে কম্পিউটারের নির্ধারিত শাটডাউন পদ্ধতিতে বন্ধ করতে হবে।

কম্পিউটারের বিভিন্ন যন্ত্রাংশের পরিচিতিঃ
ইতিপূর্বে আমরা কম্পিউটার সম্পর্কে অনেক কিছুই জেনেছি। এবার আমরা কম্পিউটারের বিভিন্ন যন্ত্রাংশের সাথে সরাসরি পরিচিত হব।কম্পিউটারের প্রধান প্রধান অংশগুলোর বর্ণনায় প্রথমে আলোচনা করবো কিম্পিউটারের সিপিইউ বা কেন্দ্রীয় প্রক্রিয়াজাতকরণ অংশ, ইরেজিতে সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট নিয়ে।
সিপিইউঃ বাহ্যিক দৃষ্টিতে এটা একটা লম্বাটে বাক্সের মতো দেখতে। এই অংশে কম্পিউটার তার যাবতীয় প্রক্রিয়াজাত করার কাজগুলো করে। এর মধ্যেই থাকে অনেক প্রয়োজনীয় ডিভাইস। যেমন, হার্ডডিস্ক, ফ্লপি ডিস্ক, সিডি বা ডিভিডি ড্রাইভ, মোইন বোর্ড বা মাদারবোর্ড, র‌্যাম, প্রসেসর ইত্যাদি।প্রতিটি সিপিইউ-এ একটি করে মেইন সুইচ থাকে, যেটা দিয়ে সিপিইউ অন-অফ করা যায়। এছাড়াও আরও একটি সুইচ থাকে যেটা দিয়ে সিপিইউকে রিষ্টার্ট করা যায়।(অনেক সময় কাজ করতে করতে কম্পিউটার সিষ্টেমে জ্যাম লেগে যায় তখন এই রিষ্টার্ট সুইচ ব্যবহার করে নতুন করে আবার কম্পিউটার চালু করে জ্যাম মুক্ত করতে হয়।) সিপিইউ যখন চালু থাকে তখন এর সামনের দিকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিভিন্ন রঙের ২/৩টা বাতি জ্বলতে থাকে।কম্পিউটার যখন কাজে ব্যস্ত থাকে তখন এদের মধ্যে থেকে একটি ক্ষুদ্র বাতি মিটি মিটি করে জ্বলতে থাকে।
মনিটরঃ কম্পিউটারের আউটপুট অংশে থাকে মনিটর। মনিটর হচ্ছে কম্পিউটারে কাজ করার সময় ফলাফল প্রদর্শনের একটা যন্ত্র। এটা অনেকটা টেলিভিশনের মতো কাজ করে।প্রতিটি মনিটরের একটি অন-অফ সুইচ থাকে, যা দিয়ে এটাকে অন বা অফ করা যায়। এছাড়া ছোট ছোট কিছু বোতাম থাকে, যা দিয়ে মনিটরের আলো কম-বেশী করা যায়; ফটে ওঠা দৃশ্যকে ডানে বা বামে, উপরে বা নীচে সরানো যায়।
কীবোর্ডঃ কীবোর্ড হচ্ছে কম্পিউটারের ইনপুট অংশ। এই কীবোর্ডের সাহায্যে কম্পিউটারে তথ্য বা নির্দেশ প্রবেশ করানো যায়।বিভিন্ন ধরণের কীবোর্ড এখন বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। এখানে একটি ষ্ট্যান্ডার্ড কীবোর্ড এর মধ্যে যে যে কী বা বোতাম রয়েছে তা সব কীবোর্ডেই আছে। এই কীবোর্ডের আবার বেশ কয়েকটি অংশ বা ভাগ রয়েছে এবং এই বিভিন্ন অংশের ভিন্ন ভিন্ন নামও রয়েছে।
কীবোর্ডপরিচিতিঃ একটি কীবোর্ডে মোট ৮৪ থেকে ১০১টি কোন কোন কীবোর্ডে আবার ১০২টি কী থাকে।ব্যবহারের উপর ভিত্তি করে কীবোর্ডকে মোটামুটি ৫টি ভাগে ভাগ করা যায়। যেমনঃ (১) ফাংশন কী (২)এ্যারো কী (৩) আলফা বেটিক কী (৪) নিউমেরিক বা লজিক্যাল কী (৫) এছাড়া আরও বেশ কিছু কী আছে যেগুলোকে ‘বিশেষ কী’ হিসেবে ধরা যায়।কীবোর্ডকে আবার তিনটি অংশে ভাগ করে নেওয়া যায়। যেমন বাম পাশের অংশ, মাঝের অংশ ও ডান পাশের অংশ।
(১) ফাংশন কীঃ কীবোর্ডের বাম পাশের অংশে সবচেয়ে উপরে এক লাইনে পাশাপাশি এফ১ থেকে এফ১২ আবার কোন কীবোর্ডে এফ১৫ পর্যন্ত কী থাকে এই কীগুলোকে ফাংশন কী বলে। এগুলো প্রত্যেকেই স্বয়ং সম্পূর্ণ এক একটি নির্দেশ বা কমান্ড কী।
(২) এ্যারো কীঃ কীবোর্ডের মাঝের অংশে নীচে চারটি তীর চিহ্নিত কী আছে, এদেরকে অ্যারো কী বলে।কোন ডকুমেন্ট ফাইলে কাজ করার সময় এটা ব্যবহার করে মাউসের পয়েন্টারকে উপরে-নীচে, ডানে-বামে সরানো যায়।
(৩)আলফা বেটিক কীঃ কীবোর্ডের বাম পাশের অংশে যেখানে এ থেকে জেড পর্যন্ত (কিউ থেকে এম) কীগুলো সাজানো রয়েছ এই অংশকে আলফা বেটিক অংশ এবং এই কীগুলোকে আলফা বেটিক কী বলে।
(৪) নিউমেরিক বা লজিক্যাল কীঃ বামপাশের অংশে ফাংশন কী এর নীচের লাইনে ১ থেকে ০ পর্যন্ত সংখ্যা এবং যোগ, বিয়োগ, গুণ, ভাগ ইত্যাদি বিভিন্ন সাংকেতিক চিহ্ন সম্বলিত কীগুলোকে নিউমেরিক বা লজিক্যাল কী বলে। এছাড়া কীবোর্ডের ডান পাশের অংশেও অনুরূপ সংখ্যা ও সাংকেতিক চিহ্নযুক্ত কী আছে এগুলোও এই লজিক্যাল কী এর অংশভুক্ত।
(৫) বিশেষ কীঃ কীবোর্ডের অনেকগুলো কী বিশেষ বিশেষ কার্যসম্পন্ন করে থাকে।কাজের বিশেষত্বে এদেরকে বিশেষ কী বলা যায়। যেমন-
(ক) Esc: ইএসসি কীঃ কম্পিউটারে প্রদাণ করা কোন নির্দেশ পালনের আগেই সেটা বাতিল করার জন্য এই কী ব্যবহার হয়।
(খ) Tab: ট্যাব কীঃ এই কী দ্বারা কোন তথ্য বা লেখা ডকুমেন্ট লাইনকে নির্দিষ্ট দুরত্বে সরিয়ে নেওয়া যায়।
(গ) Caps Lock: ক্যাপস লক কীঃ কীবোর্ডের নিউমেরিক ও অলফাবেটিক কীগুলোর প্রতিটি কী-তে তিনটে করে অক্ষর থাকে এবং এগুলো উপরে ও নীচের অংশে বিভক্ত থাকে। সাধারণত: ক্যাপস লক কী অফ অবস্থায় থাকে এবং এ ইংরেজী ছোট হাতের লেখা বা স্মল লেটার লেখা হয়। কিন্তু বাংলা অক্ষর লেখার ক্ষেত্রে নীচের অংশের লেখাগুলো লেখা যায়। এটা আবার লোয়ার কেস বলে। ক্যাপস লক কী অন থাকলে ইংরেজী হাতের লেখা বড় হাতের হয় অর্থাৎ ক্যাপিটাল লেটার হয়। বাংলা লেখার ক্ষেত্রে অবশ্য উপরের অংশের অক্ষরগুলো লেখা হয়।এটাকে আপার কেস বলে।এই কী অন থাকলে কীবোর্ডের ডান পাশে কোণায় ছোট একটি বাতি জ্বলতে থাকে।
(ঘ) Shift: শিফট কীঃ এই কী চেপে ধরে লিখলে বড় হাতের বা ক্যাপিটাল লেটার লেখা হয় বাংলায় উপরের লেখাগুলো লেখা যায়।এছাড়া অনেক ক্ষেত্রে কমান্ড সহযোগি হিসেবেও ব্যবহৃত হয়।
(ঙ) Ctrl: সিটিআরএল কীঃ এটা একটি কমান্ড কী বা কম্পিউটারকে নির্দেশ প্রদাণের কী। কিন্তু এটা ফাংশন কীগুলোর মতো স্বয়ং সম্পূর্ণ নয়। এই বোতাম চেপে ধরে কীবোর্ডথেকে অন্য অক্ষরযুক্ত বোতাম চেপে কমান্ড মিতে হয়।
(চ) Alt: এএলটি কীঃ বিভিন্ন প্রোগ্রামে বিভিন্ন নির্দেশ দেওয়ার জন্য সহযোগি কমান্ড কী হিসেবে কাজ করে।
(ছ) Space Bar স্পেসবার কীঃ কীবোর্ডের সবচেয়ে বড় বোতাম এটি। পাশাপাশি কিছু অক্ষর বা শব্দের মধ্যে বিরতি বা ফাক তৈরীর কাজে এই কী ব্যবহার করা হয়।
(জ) Delete ডেল বা ডিলেট কীঃ ডকুমেন্টের কোন অংশ বা সম্পূর্ণ অংশ মুছে ফেলতে এই কী ব্যবহৃত হয়।
(ঝ) Enter কীঃ এটি মূলত: একটি কমান্ড কী। কম্পিউটারকে কোন নির্দেশ দিয়ে তা কার্যকর করার জন্য এই কী ব্যবহার করা হয়। লেখার সময় নতুন প্যারা তৈরীতেও একে ব্যবহার করা হয়।
(ঞ) Pushe/Break: কম্পিউটারে কোন লেখা দ্রুতগতির কারণে পড়তে অসুবিধা হলে এই কী চাপ দিয়ে তা পড়া যায়।
(ট) Print Screen: কম্পিউটারের পর্দায় দৃশ্যত যা কিছু থাকে তা প্রিন্ট নিতে এই কী ব্যবহার করা হয়।
(ঠ) Home : এই কী ব্যবহার করে মাউস পয়েন্টার লেখা বা পাতার প্রথমে আনা যায়।
(ড) End : এই কী ব্যবহার করে মাউস পয়েন্টার লেখা বা পাতার শেষে আনা যায়।
(ঢ) Page Up: এই কী ব্যবহার করে মাউস পয়েন্টার লেখা বা পাতার উপরের দিকে নেওয়া যায়।
(ণ) Page Down: এই কী ব্যবহার করে মাউস পয়েন্টার লেখা বা পাতার নীচের দিকে নেওয়া যায়।
(ত) Insert:  কোন লেখার মাঝে লিখলে তা সাধারণত লেখার পানদিকে লেখা হয়, কিন্তু এই ব্যবহার করে লিখলে তা আগের লেখা বর্ণের উপর ওভার রাইটিং হয়। কাজ শেষে আবার এই কী চাপলে তা আগের অবস্থানে ফিরে আসে।
(থ) Back Space: লেখার পিছনের অংশ মুছে ফেলতে এই কী ব্যবহার করা হয়।
(দ) Num Look: এই কী চাপা থাকলে কীবোর্ডের ডান পাশের অংশের কীগুলো চালু হয়।এটা চালু থাকলে কীবোর্ডের ডান কোনায় ছোট বাতি জ্বলতে থাকে।
(ধ) Start Menu key: এই কী চেপে ষ্ট্যাট মেনুর বিভিন্ন প্রোগ্রাম ওপেন করা যায়।
এছাড়াও মাল্টিমিডিয়া কীবোর্ডে আরও তিনটি কী দেখা যায়, যেমন-
(ন) Stand by Mood: এই কী চাপলে কম্পিউটার ষ্ট্যান্ড বাই মডে চালু থাকবে কিন্তু মনিটর বন্ধ হয়ে যাবে।
(প) Mail key: এই কী চাপলে আউট লুক এক্সপ্রেস চালু হয় এবং তা দিয়ে মেইল পাঠানো বা মেইল পড়া যায়।তবে ইন্টারনেট চালু থাকতে হবে।
(ফ) Web key : এই কী ব্যবহার করে সরাসরি ইন্টারনেট ব্রাউজার ওপেন করা যায় এবং ব্রাউজ করা যায়। মোটামুটি এই হলো আমাদের কীবোর্ডের বিভিন্ন অংশ।
মাউসঃ মাউসের সাথে আমরা আগেই পরিচিত হয়েছি। এটি অনেকটা ইদুরের মতো দেখতে তাই এর নাম মাউস। এক সরু প্রান্ত থেকে একটি তার সরাসরি সিপিইউ-এ সংযুক্ত থাকে। মাউসের উপরিভাগে দুটো চাপ দেওয়ার জায়গা আছে(অবশ্য অনেক মাউসে তিনটিও থাকে), এর ডান পাশের বোতামকে বলা হয় রাইট বাটন আর বাম পাশের বোতামকে বলা হয় লেফট বাটন। কম্পিউটার ওপেন করা থাকলে মাউস নাড়া দিলে একটি তীর চিহ্ন নড়া চড়া করে এটাকে বলা হয় মাউস পয়েন্টার। আর এই নাড়া চাড়া করাকে বলা হয় মাউস ড্রাগ করা। সাধারণত কোন ফাইল বা ফোল্ডারের আইকন সিলেক্ট বা নির্বাচন করতে হলে মাউসের পয়েন্টার তার উপর নিয়ে মাউসের বাম পাশের বোতাম একবার চাপ দিলে তাকে বলে সিঙ্গল ক্লিক। আর ওটাকে ওপেন করতে মাউসের বাম পাশের বোতাম ঘন ঘন দুবার চাপ দিতে হয় এই ঘনঘন দুবার চাপ দেওয়াকে বলে মাউসের ডবল ক্লিক। মাউসের ডান পাশের বোতাম চাপলে তাকে বলে রাইট ক্লিক। এই রাইট ক্লিক করে সাধারণত কোন ফাইল ফোল্ডার সিলেক্ট বা খোলা যায় না তবে এটা ব্যবহার করে তাৎক্ষণিক কিছু মেনু কমান্ড তালিকা পাওয়া যায়।

৪টি মন্তব্য: